বাংলাদেশে গত এক বছরে ধর্মীয় স্বাধীনতা কমেছে : মার্কিন সংস্থার প্রতিবেদন

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

প্রতিমা ডেস্ক(২৭ জুলাই) :: যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশন ইউএসসিআইআরএফ দাবি করেছে, গত এক বছরে বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা কমেছে।

চলতি বছরের মে মাসে বাংলাদেশে ইউএসসিআইআরএফের একটি প্রতিনিধিদলের সফরের পর সংগঠনটি তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ দাবি করল। এতে বলা হয়, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ধারাবাহিক হামলার মধ্যে বাংলাদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা কমেছে।

মার্কিন ফেডারেল সংস্থাটি প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়টি জানিয়ে ২১ জুলাই দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বিক্ষোভের পর একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এ সরকার বিভিন্ন ধরনের সংস্কার, সংশোধনী ও সাংবিধানিক পরিবর্তনের প্রস্তাব করলেও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে অন্তর্নিহিত উত্তেজনা এখনো রয়ে গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অপসারণের দাবিতে যে বিক্ষোভ হয়েছে, তা সহিংস উপায়ে দমনের পর হিন্দু গোষ্ঠীগুলো তাদের সম্প্রদায়ের সদস্য ও মন্দিরের ওপর আক্রমণ ও ভাঙচুর বাড়ার দাবি করেছে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে অসম্মানিত করার জন্য সহিংসতার মিথ্যা বা অসমর্থিত দাবি ছড়ানো হয়। শেখ হাসিনার বিদায়ের (৫ আগস্ট, ২০২৪) পর সহিংসতায় বহু হিন্দু নিহত হওয়ার খবর এলেও হত্যাকাণ্ডগুলোর পেছনে সম্ভবত ধর্মের চেয়ে রাজনৈতিক কারণ বেশি ছিল।

আহমদিয়া মুসলিম সম্প্রদায় তাদের সম্পত্তিতে আক্রমণের তথ্য দিয়েছে।

অন্যান্য ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য তার অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে।

সরকারি প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর নিয়মতান্ত্রিক চাপ সাধারণভাবে আরও বাড়তে থাকে। শেখ হাসিনার সরকারের জারি করা এক বিতর্কিত বিবৃতিতে যে ইঙ্গিত দেওয়া হয়, তাতে বলা হয়, দেশের খ্রিষ্টানরা বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের কিছু অংশ থেকে একটি ‘খ্রিষ্টান রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করছে। গত নভেম্বরে পুলিশ হিন্দুদের সুরক্ষার দাবিতে বিক্ষোভ করার সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে হিন্দু পুরোহিত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ করে। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সমর্থক ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, ফলে একজন মুসলিম আইনজীবীর মৃত্যু হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মিয়ানমারের রাখাইনে ক্রমবর্ধমান যুদ্ধের ফলে নতুন করে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। এক বছর ধরে প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে আসা মূলত মুসলিম রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কক্সবাজারে তাদের শিবিরে গণপিটুনিসহ বিভিন্ন ধরনের গুরুতর হুমকির সম্মুখীন হয়। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গত অক্টোবরে জাতিসংঘের কাছে রাখাইন রাজ্যে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়, যাতে সেখানে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা দ্রুত পুনর্বাসন ও সাহায্য পেতে পারে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, উগ্রবাদী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের একটি আঞ্চলিক শাখা ভারত, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কায় অতিরিক্ত শক্তি সঞ্চয়ের পরিকল্পনা করছে।