মহেশখালীর মৈনাক পর্বতে আদিনাথ মেলায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

প্রতিমা রিপোর্ট(১৮ ফেব্রুয়ারি) :: কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মৈনাক পর্বতের আদিনাথ মন্দিরে সনাতন ধর্মালম্বীদের শিব চতুর্দশী পূজা শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শুরু হয়েছে। পাশাপাশি চলছে মেলা। তবে ধর্মীয় এই নীতিকে ছাপিয়ে আদিনাথ মেলায় দেখা মিলেছে সকল ধর্মের মানুষের। লাখো ভক্তের সমাগমের কারণে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। মেলা প্রাঙ্গণে বাড়ছে ভিড়। আগত দর্শনাথী ও পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।

মেলায় প্রতিবছরের মতো এবারও ১০ দিনব্যাপী মেলায় আদিনাথ মন্দিরের শিবদর্শন করার জন্য ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমারসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তীর্থযাত্রীর সমাগম ঘটেছে। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে লাখো তীর্থযাত্রীর সমাগম হবে বলে মেলার আয়োজকেরা আশা করছেন।

এদিকে সমতল ভূমির মহাসড়ক থেকে মন্দির সড়ক হয়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত আদিনাথ মন্দির পর্যন্ত সর্বত্র লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।আর এ বিশাল জনসংখ্যাকে ঘিরে বসে মেলা।তীর্থ দর্শনে এসে বিভিন্ন দেশের পুণ্যার্থীরা পূজা শেষে মেলায় কেনাকাটা করেন। ফলে এসময় তীর্থ ভূমি ও মেলা প্রাঙ্গণে তিল ঠাঁয় থাকে না।

আদিনাথ মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুজন কান্তি দে বলেন, প্রথম তিন দিন চলবে আদিনাথ মন্দিরের শিব চতুর্দশী পূর্জা। পূজার পরও ১০ দিন চলবে মেলা। তবে ২ মার্চ পর্যন্ত চলবে মেলা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের সেবা দেওয়ার জন্য পূজা ও মেলা প্রাঙ্গণে কাজ করছেন ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক।

মহেশখালীতে আদিনাথ মেলায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় - চকোরী—Daily Chakori

আয়োজকরা জানান, মন্দিরে শিবদর্শনের জন্য তীর্থযাত্রীরা সরাসরি গাড়িযোগে চকরিয়ার বদরখালী হয়ে মহেশখালীর আদিনাথে চলে আসেন।  আগে সমুদ্রপথে কক্সবাজার-মহেশখালী পারাপারের সময় দুই জেটিতে তীর্থযাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হতেন। বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ও মহেশখালী উপজেলার কালামারছড়া ইউনিয়নের-চালিয়াতলী ব্রিজ হয়ে জনতাবাজার-শাপলাপুর দিয়ে ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের শেষ প্রান্তে এসে আদিনাথ মন্দির এলাকায় গাড়িযোগে পৌঁছানো যায়।

স্থানীয় চেয়ারম্যান রিয়ান সিকদার জানান, এখানে মুসলিম-হিন্দু-বৌদ্ধ সকল সম্প্রদায়ের লোকজন একে অপরের সাথে মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করেন। সকলে একসাথে উৎসবমুখর পরিবেশে মেলা উপভোগ করছেন। মেলায় প্রসিদ্ধ খাবার মিঠাইর জিলাপি সবার কাছে প্রিয়। তাই মেলা থেকে জিলাপি নিয়ে যাচ্ছে অনেকে।

মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রণব চৌধুরী জানান, উপমহাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী তীর্থস্থান মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির। শিব চতুর্দশী পূজা ও মেলা সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখানে পুলিশ, আনসার এবং গ্রাম পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। নিরাপত্তা বেষ্টনিতে ঢাকা রয়েছে পুরো পূজা ও মেলা প্রাঙ্গণ।

আদিনাথ মেলা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গতবারের চেয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।  ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও অবস্থান নিয়েছেন। চিকিৎসকদের একটি দল এবং পুলিশের প্রায় শতাধিক সদস্য নিরাপত্তার জন্য কাজ করছেন। র্তীথ যাত্রীদের যাতায়তের সুবিধার্থে নৌ-যান ও সড়ক পথে যানবাহণ ভাড়া নির্ধারণ সহ তীর্থ যাত্রীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।