হিন্দু ধর্মে গুরু পূর্ণিমা কেন পালন করা হয় ? জানুন এর গুরুত্ব

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

প্রতিমা ডটকম(১৭ জুলাই) :: গুরু পূর্ণিমা হল একটি বৈদিক প্রথা, যার মধ্য দিয়ে শিষ্য তাঁর গুরুকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে থাকেন। আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা তিথিতে পালিত হয় গুরু পূর্ণিমা। হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মে গুরু পূর্ণিমার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই তিথিতেই মুণি পরাশর ও মাতা সত্যবতীর ঘরে মহাভারতের রচয়িতা মহর্ষি বেদব্যাস জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাই এই দিনে মহর্ষি বেদব্যাসের জন্ম জয়ন্তীও পালন করা হয়।

মনে করা হয়, তিনিই চারটি বেদের ব্যাখ্যা করেছেন। বেদ বিভাজনের শ্রেয় তাঁকেই দেওয়া হয়েছে। তাই তাঁর নাম বেদব্যাস। ১৮টি পুরাণ ছাড়াও তিনি রচনা করেন মহাভারত ও শ্রীমদ্ভগবত। এই কারণে গুরু পূর্ণিমাকে ব্যাস পূর্ণিমাও বলা হয়।

বৌদ্ধ ধর্ম মতে, বোধিজ্ঞান লাভের পরে আষাঢ় মাসের পূর্ণিমায় সারনাথে প্রথম উপদেশ দেন গৌতম বুদ্ধ।

Guru Purnima 2021

হিন্দু পুরাণ মতে, ভগবান শিব বা মহাদেব হলেন আদি গুরু। সপ্তর্ষির সাতজন ঋষি হল তাঁর প্রথম শিষ্য – অত্রি, বশিষ্ঠ, পুলহ, অঙ্গীরা, পুলস্থ্য, মরীচি এবং কেতু (নাম নিয়ে মতভেদ আছে)।

শিব এই তিথিতে আদিগুরুতে রূপান্তরিত হন এবং এই সাত ঋষিকে মহাজ্ঞান প্রদান করেন। তাই এই তিথি হল গুরু পূর্ণিমা।

২০২১ সালের গুরু পূর্ণিমার দিন-ক্ষণ
গুরুপূর্ণিমা উদযাপিত হবে – ২৪ জুলাই, শনিবার পূর্ণিমা তিথি শুরু – ২৩ জুলাই, সকাল ১০টা বেজে ৪৩ মিনিটে
পূর্ণিমা তিথি সমাপ্ত – ২৪ জুলাই, সকাল ০৮টা বেজে ০৬ মিনিটে
Guru Purnima 2021
গুরু পূর্ণিমার গুরুত্ব
‘গুরু’ শব্দটি ‘গু’ এবং ‘রু’ এই দুটি সংস্কৃত শব্দ দ্বারা গঠিত। ‘গু’ শব্দের অর্থ ‘অন্ধকার’ বা ‘অজ্ঞতা’ এবং ‘রু’ শব্দের অর্থ ‘অন্ধকার দূরীভূত করা’। ‘গুরু’ শব্দটি দ্বারা এমন ব্যক্তিকে নির্দেশ করা হয় যিনি অন্ধকার দূরীভূত করেন, অর্থাৎ যিনি অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে যান তিনিই গুরু।
গুরু আমাদের মনের সব সংশয়, সন্দেহ, অন্ধকার দূর করেন এবং নতুন পথের দিশা দেখান। ভারত হল ঋষি-মুনিদের দেশ, যেখানে তাঁদের ঈশ্বরতুল্য বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, ভক্তদের প্রতি ভগবান রুষ্ট হলে গুরুই রক্ষার পথ দেখাতে পারেন।
প্রাচীনকাল থেকেই এই দেশে গুরুদের সম্মানজনক স্থান দেওয়া হয়েছে। গুরুর দেখানো পথে চলে, কোনও ব্যক্তি শান্তি, আনন্দ ও মোক্ষ প্রাপ্তি করতে পারে। তাই গুরুকে শ্রদ্ধা জানাতে বৈদিক যুগ থেকেই গুরু পূর্ণিমা পালিত হয়ে আসছে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এই পূর্ণিমার দিনে গুরুর পূজার্চনা করলে বিশেষ আশীর্বাদ মেলে।